নতুন আরেকটি নির্বাচনের পক্ষে জনগণ
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সব দলের অংশগ্রহণে নতুন আরেকটি নির্বাচন চাচ্ছেন দেশের সব শ্রেণী পেশার মানুষ। তবে তা হতে হবে সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে৷ একাধিক জনমত জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউন বৃহস্পতিবার তাদের নিজস্ব জনমত জরিপের ফল প্রকাশ করেছে৷ তাতে বলা হয়েছে, জরিপে অংশগ্রহণকারী ৭২ শতাংশ মানুষই সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একটি নতুন সংসদ নির্বাচন চান৷ এছাড়া ৫২ শতাংশ মনে করেন, দ্রত আরেকটি নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন৷ ৬০০ জনের মধ্যে চালানো এই জরিপে অবশ্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগই এখনও সবচেয়ে জনপ্রিয় দল হিসেবে উঠে এসেছে৷
এর একদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইড এবং যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ডিএফআইডি-র অর্থায়নে ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) পরিচালিত জরিপে বলা হয়, ৫৭ শতাংশ মানুষ আগামী ছয় মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে৷ তারা চান অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন৷ অন্যদিকে ৩৪ শতাংশ নতুন সরকারের মেয়াদ পূর্তির পক্ষে বলেছেন৷ তারা ৫৫০ জনের মধ্যে এই জরিপ পরিচালনা করেন৷
তবে সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, তারা পাচ বছরই ক্ষমতায় থাকবেন৷ বুধবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, ‘সরকারের মেয়াদ ২০১৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত, সরকার পূর্ণ মেয়াদ ক্ষমতায় থাকবে৷’
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সভার বৈঠকের শুরুতে তিনি বলেন, ‘আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনও বর্তমান সংবিধান মোতাবেকই অনুষ্ঠিত হবে৷ সংসদে আমাদের দুই-তৃতীয়াংশ মেজরিটি আছে৷ আমরা সংবিধান সংশোধন করতে পারি, কিন্তু সংবিধান সংশোধন করার কোনো ইচ্ছে আমাদের নেই৷ যত চাপই আসুক আমরা সংবিধান সংশোধন করবো না৷ বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী, আগামী নির্বাচন হবে, অতীতে যেভাবে হয়েছে৷’
এ প্রসঙ্গে টিআইবি-র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘জনমত জরিপগুলোতে সংখ্যার হেরফের হতে পারে৷ তবে সব দলের অংশগ্রহণে আরেকটি নির্বাচন যে দেশের মানুষের প্রত্যাশা, তা অস্বীকার করার উপায় নেই৷’
তিনি বলেন, ‘৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের আগেও সরকারের শীর্ষ মহল থেকে বলা হয়েছিল সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে এই নির্বাচন করতে হচ্ছে৷ সরকার সব দলের অংশগ্রহণে আরও একটি নির্বাচনের আয়োজন করবে৷ তবে সরকারে মন্ত্রীদের কথায় মনে হচ্ছে যে, সরকার তার সেই কথা থেকে সরে আসছে, যা জনগণের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি করছে৷’
তিনি আরও বলেন, ‘৫ই জানুয়ারি নির্বাচন আইনের দিক দিয়ে ঠিক আছে৷ কিন্তু সংসদীয় গণতন্ত্র ও সংবিধানের যে স্পিরিট – তার প্রতিফলন হয়নি এই নির্বাচনে৷’
তাই ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সরকারের উচিত হবে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করা৷ সুনির্দিষ্ট করে বলে দেওয়া কখন সংলাপ আর কখন নির্বাচন হবে৷ তাতে সাধারণ মানুষ স্বস্তি পাবে৷