কুমির গাছেও উঠতে পারে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ  কুমিরের আনাগোনা আছে, এমন জায়গায় চলতে গিয়ে মানুষ জলের পাশাপাশি ডাঙায়ও সতর্ক চোখ রাখে। কিন্তু এটুকুই যথেষ্ট নয়। আশপাশে গাছ বা উঁচু কিছু থাকলে ওপরেও চোখ রাখতে হবে। কারণ গাছে ওঠার কর্মটিতেও কুমির পারদর্শী বলে সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে। খবর রয়টার্সের।

টেনেসি ইউনিভার্সিটির গবেষক ভ্লাদিমির দিনেত জানান, গাছে চড়তে সহায়ক, এমন পা ও আঙুল না থাকলেও কুমির দিব্যি মগডাল পর্যন্ত উঠতে পারে। অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা ও উত্তর আমেরিকায় পর্যবেক্ষণে কুমিরের ভূমি থেকে ছয় ফুট ওপরে ওঠারও প্রমাণ পাওয়া গেছে। ভ্লাদিমির বলেন, কুমির গাছ বেয়ে প্রায় ৩০ ফুট ওপরে উঠতে পারে। বাচ্চা কুমির নিচ থেকে সোজা ওপরে ওঠে। বড় কুমির ওঠে ধীরে এবং এ সময় গাছের ডাল ও কাণ্ডের বাঁকগুলোর সুবিধা নেয়। পুরো ব্যাপারটিতেই কুমিরের ক্ষীপ্রতার প্রমাণ মেলে।

হারপেটোলজি নোটসের জানুয়ারি সংখ্যায় কুমিরের বৃক্ষারোহণ নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদনটি ছেপেছেন ভ্লাদিমির এবং তার সহযোগী দুই গবেষক অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটির অ্যাডাম ব্রিটন ও ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডার ম্যাথু শার্লি। রোদ পোহানো নতুবা নজরদারির সুবিধার্থে উভচর এ প্রাণীটি গাছে ওঠে বলে জানান ভ্লাদিমির।  কখনো আত্মরক্ষা, কখনো শিকারের অপেক্ষায় নজরদারি করে কুমির। ছায়াঘন জায়গায় রোদ পোহাতে কুমিরকে গাছে উঠতে দেখে বোঝা যায়, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য এ ধরনের প্রাণীর বিকল্প ব্যবস্থার প্রয়োজন হয়। কাছ থেকে দীর্ঘদিন কুমির দেখতে পাওয়া লোকজন কয়েক দশক আগে এদের বৃক্ষারোহণ প্রতিভার কথা জানলেও এবারই প্রথম বিষয়টি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ গবেষণা হলো বলে ভ্লাদিমির উল্লেখ করেন।

২০১৩ সালে পৃথক এক গবেষণায় ভ্লাদিমির পাখিদের বিভ্রান্ত ও প্রলুদ্ধ করতে চোয়ালের অগ্রভাগে খড়কুটো রেখে কুমিরদের নির্লিপ্ত ওত পেতে থাকার কথা জানান। এবার কুমিরের গাছে ওঠার খবরে বোঝা গেল, বিলুপ্ত প্রাণীগুলোর ব্যাপারে কোনো উপসংহারে আসতে জীবাশ্মের অধ্যয়নই যথেষ্ট নয়।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ