পুনঃতফসিলকৃত ঋণের আদায় নিশ্চিতের নির্দেশ
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ রাজনৈতিক অস্থিরতায় পুনঃতফসিলের নিয়ম-নীতি নমনীয়তার সুযোগ নেওয়া খেলাপিদের ঋণ আদায় নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মঙ্গলবার বিকালে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় এ নির্দেশনা দিয়েছে গভর্নর ড. আতিউর রহমান। একইসঙ্গে এসব ঋণের আরোপিত ও অনারোপিত সুদ আদায় না করে আয় খাতে না দেখানো এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্রভিশন(নিরাপত্তা সঞ্চিতি) রাখার পরামর্শও দেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীরা, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবুল কাশেম, এস কে সুর চৌধুরীসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে তার আগের প্রান্তিক(সেপ্টেম্বর) এর তুলনায় প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ কমেছে।
সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫৬ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। ডিসেম্বর শেষে তা কমে দাড়িয়েছে ৪০ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা।
বৈঠক শেষে এস কে সুর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, গভর্নর বলেছেন, খেলাপি ঋণ কমে যাওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের এ বিষয়ে নীতি নমনীয়তা।
যদিও আতিউর রহমান খেলাপি ঋণের এই অংক কম বেশি হতে পারে বলে মনে করেন। তিনি বলেছেন, ডিসেম্বর ভিত্তিক খেরাপি ঋণ ব্যাংকগুলোর অনিরীক্ষিত প্রতিবেদন থেকে তৈরি করা। ব্যালান্স শিট নিরীক্ষার পর এই পরিমানে তারতম্য হতে পারে।
এছাড়াও বৈঠকে, পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ নির্দিষ্ট সীমায় মধ্যে ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনা নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন-২০১৩ অনুযায়ী পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ নির্দিষ্ট সীমায় ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনা নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ অনেক বেশি যা ব্যাংক কোম্পানি আইনের পরিপন্থি।
আস্তে আস্তে বিনিয়োগ কমিয়ে আনতে হবে। তা না হলে একসঙ্গে কমিয়ে আনলে আবার ধস নামতে পারে।
ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন-২০১৩ অনুযায়ী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে তাদের পরিশোধিত মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়াম, সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও রিটেইন আর্নিংয়ের মোট পরিমাণের ২৫ শতাংশের বেশি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে না। কিন্তু সব ব্যাংকের বিনিয়োগ ২৫ শতাংশতের ওপরে আছে। তাই ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী গত জুলাইয়ে ব্যাংকগুলোকে তাদের বিনিয়োগ ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে বলা হয়। এর জন্য সময় দেয়া হয় ৩ বছর। সময় শেষ হবে ২০১৬ সালের ২১ জুলাই।
তিনি বলেন অ্যাডভান্স পেমেন্ট গ্যারান্টি (এপিজি) এক মাসের মধ্যে দিতে হবে। যদি কোন ব্যাংক এপিজি সঠিক সময়ে পরিশোধ না করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেই সব ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে এপিজির টাকা পরিশোধ করা হবে বলে জানান সুর চৌধুরী।