রাত পোহালেই ভোট উৎসব
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ রাত পোহালেই ভোট উৎসব। সকল প্রচার-প্রচারণা বন্ধ, এখন শুধু ভোটের অপেক্ষা। উচ্ছ্বাসবিহীন জাতীয় নির্বাচনের পর স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রণ থাকায় সর্বত্র উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। ভোটারদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে বিপুল আগ্রহ ও উদ্দীপনা । বিরামহীন-জমজমাট প্রচারণায় উৎসব-আমেজ জাতীয় নির্বাচনকেও হার মানিয়েছে। প্রার্থীদের বিজয়ী করতে দলীয় নেতা-কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ভোট গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সুষ্ঠ ভাবে ভোটগ্রহণের জন্য সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকায় নির্বাচনী উপকরণ পৌঁছানো হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি সেনা ও বিজিবি টহল দিচ্ছে।
সোমবার মধ্যরাতে ৯৬ উপজেলায় প্রচার প্রচারণা শেষ হয়েছে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী জোট অংশ না নিলেও এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে তারা। নির্বাচনী লড়াইয়ে বিএনপির পাশাপাশি আছেন জামায়াতের নেতারাও। একতরফা ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের মতো আওয়ামী লীগ যেনতেনভাবে উপজেলাও দখলে নিতে চায়। ফলে নির্বাচনে জোর লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে প্রায় সব জায়গায়। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনে দেড় কোটিরও বেশি ভোটার ভোট দেবেন, এই নির্বাচনে।
নির্বাচনী এলাকায় নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নির্বাচনী সামগ্রী পৌঁছে দেয়াসহ সব প্রস্তুতি এরইমধ্যে সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সদস্যদের পাশাপাশি টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। উপজেলা নির্বাচন কাগজে কলমে নির্দলীয় হলেও, কিন্তু বাস্তবে চিত্র ভিন্ন। প্রথম দফায় যে ৯৬টি উপজেলায় নির্বাচন হতে যাচ্ছে তার প্রায় সব কটিতে রয়েছে দলীয় উত্তাপ আর নির্বাচনী আমেজ। ৯৬টি উপজলোয় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রায় দেড় কোটি ভোটার ভোট দেবেন। ওই পদগুলোত প্রার্থী হয়েছেন ১২৭৪ জন। বেশ কয়েকটি এলাকায় আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গ ও প্রতিপক্ষ কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ এনেছে অন্যান্য প্রার্থীরা। ওইসব এলাকায় প্রচারণায় বাধা এবং আচরনবিধি ভঙ্গের অভিযোগ তদন্ত করছে স্থানীয় নির্বাচন কমিশন। উৎসব মুখর এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করছে নির্বাচন কমিশন।
ইসি সূত্র জানায়, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ব্যালট, বক্স ও অন্যান্য উপকরণ নেয়া শুরু হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তার প্রতিনিধির মাধ্যমে এসব উপজেলায় উপকরণ পাঠানো হয়েছে। রোববার আইন-শৃংখলা রক্ষায় নির্বাচনী উপজেলাগুলোতে বিজিবি মোতায়েনের পর সোমবার থেকে সেনা মোতায়েন করা হয়। এছাড়া অন্যান্য বাহিনী ভোটারদের নিরাপদে ভোট দেয়ার জন্য মাঠে কাজ করবে বলে ইসি সূত্র জানিয়েছে। ইসির তথ্যানুযায়ী, ৯৬টি উপজেলায় ১ হাজার ২৭৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন ৪৩২ জন। ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ৫১৩ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ৩২৯ জন। এসব এলাকায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ কোটি ৬৪ লাখ ৭৮ হাজার ১৭২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮১ লাখ ৯১ হাজার ৫৩৭ জন আর নারী ভোটার ৮২ লাখ ৮৬ হাজার ৬৩৫ জন। ৯৭টি উপজেলায় মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৬ হাজার ৯৯৫টি ও ভোটকক্ষ ৪৩ হাজার ২৯০টি। প্রতি ভোটকেন্দ্রে একজন করে প্রিসাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ৮৬ হাজার ৫৮০ জন। নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থী, নির্বাচনী কর্মী বা ভোটাদের আইন লংঘনে তাৎক্ষণিক শাস্তি দিতে ৯৬ উপজেলায় ৩৮৮ জন নির্বাহী ও ৯৭ জন বিচারক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।