২ বছরেও গ্রেফতার হল না সাগর-রুনি হত্যার আসামিরা

সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ  সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা’র দুই বছর অতিক্রান্ত হলেও আলোচিত এই হত্যা মামলার প্রকৃত একজন আসামিও গ্রেফতার হয়নি। উদঘাটন করা যায়নি হত্যার মূল কারণ। তদন্তেও নেই কোন অগ্রগতি। দু’দফা হাত ঘুরে তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া র‌্যাবের তদন্ত কার্যক্রম এখন প্রায় বন্ধ। বিষয়টি নিয়ে নিহতের পরিবার ও গনমাধ্যম কর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙ্গা’র বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি ২০১২’র ১১ ফেব্রুয়ারী রাজধানীর রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন।
তদন্ত কার্যক্রমে অগ্রগতি না হওয়ায় শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশের পর ডিবি’র হাত ঘুরে দেশের জনপ্রিয় এই সাংবাদিক দম্পতি হত্যা মামলাটি র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন র‌্যাবের কাছে স্থানান্তর করা হয় প্রায় ১৯ মাস আগে। র‌্যাব এ মামলা তদন্তের দায়িত্বভার গ্রহনের পর সাগর-রুনির ডিএনএ’র আলামত সংগ্রহ করে দেড় বছর আগে পরীক্ষার জন্য আমেরিকা পাঠায়। আজও সেই ডিএনএ রিপোর্ট বাংলাদেশে ফেরৎ আসেনি। উদঘাটিতও হয়নি মামলার প্রকৃত রহস্য।
সাগর-রুনি হত্যার প্রকৃত আসামী গ্রেফতারের নামে পুলিশ, সিআইড, ডিবি ও র‌্যাব বিগত সময়ে কিছু নাটক উপস্থাপন করেছে বলে মনে করছেন গণ-মাধ্যম কর্মীরা। দু’বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও এই নির্মম হত্যাকান্ডের কোনো কূল-কিনারা না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে সাগর-রুনির পরিবারের সদস্যরা।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের তদন্তের দায়িত্বে থাকা র‌্যাব এই পর্যন্ত আটজনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে। যার মধ্যে নিহতদের রাজাবাজারের বাসার দারোয়ান এনামুলও রয়েছে। গ্রেফতার হওয়া অন্য সাতজন হলেন- তানভীর রহমান, বাড়ির অপর এক দারোয়ান পলাশ রুদ্র পাল, সন্দেহভাজন ডাকাত রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ ও সাঈদ। তবে র‌্যাবের এই গ্রেফতারকে অগ্রগতি হিসেবে দেখছে না নিহত সাগর-রুনির পরিবার ও গণমাধ্যম কর্মীরা।
মামলার বাদি মেহেরুন রুনির ভাই নওশের রোমান  এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, ‘পজেটিভলি দেখার কোনো কারণই নেই। এগুলো ‘অ্যাচিভমেন্ট’ নয়। এই গ্রেফতার সম্পূর্ন লোক দেখানো।’
নওশের রোমান আরো বলেন, ‘সাগর-রুনির মত জনপ্রিয় দুই সাংবাদিক তাদের বাসায় খুন হওয়ার পর এই মামলার দুই বছর পার হয়েছে। অথচ এই মামলার প্রকৃত একজন আসামিও ডিটেক্টই হয়নি। এটা নিহতের পরিবারের জন্য ভীষন কষ্টের।’
নওশের ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘র‌্যাব এই মামলার তদন্তভার পেয়ে কিছুদিন পর পর একটা নতুন নাটক করছে। আর আমরা সবাই দর্শক হয়ে তা দেখছি। শুধুমাত্র কালক্ষেপন করার লক্ষ নিয়ে সাগর-রুনির ডিএনএ পরীক্ষা করতে আমেরিকাতে পাঠানো হয়েছে।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান এবিসি নিউজ বিডিকে ‘বলেন, ‘আমাদের দুই সহকর্মীর মৃত্যুর দুই বছরেও প্রকৃত আসামি গ্রেফতার হবে না, তদন্তের দায়িত্বে থাকা র‌্যাব ব্যর্থ হবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে প্রকৃত আসামিদের গ্রেফতার করার ঘোষনা সবারই জানা। সেই ৪৮ ঘন্টা থেকে দুই বছর অতিক্রম করেছে গত ১১ ফেব্রুয়ারী। এটা কত যে কষ্টের, গণমাধ্যমের কর্মীরা ছাড়া কেউই তা বুঝবেন না।’

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ