বদির অবৈধ সম্পদ, তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল

রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ  কক্সবাজার-৪ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির অবৈধ সম্পদ থাকার যে অভিযোগ উঠেছে সেটির অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) দাখিল করা হয়েছে।

এর আগে এ সংসদ সদস্যর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুদকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা তার নির্বাচনী এলাকায় অনুসন্ধান চালান। এছাড়া জাতীয় নির্বাচনের আগে দাখিলকৃত হলফনামা সংগ্রহ করে দুদকের তত্ত্বাবধানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

দুদক সূত্র জানায়, গত ১২ জানুয়ারি দুদকের নিয়মিত বৈঠকে সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিসহ সরকারদলীয় সাত নেতার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ লক্ষ্যে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে দাখিলকৃত হলফনামা তলব করা হয়। এরপর কক্সবাজারে তার নির্বাচনী এলাকায় দুদকের তদন্তকারী দল অনুসন্ধান চালায়। সেখানকার স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে বদির সম্পত্তির যাবতীয় দলিল ও তথ্যাদি সংগ্রহ করা হয়। তারপর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সরকার দলীয় এ সংসদ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এসব অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের আলোকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার এমপি বদির অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

উল্লেখ্য, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত বদির হলফনামার তথ্য অনুসারে, ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তার আয় বেড়েছে ৩৫১ গুণ। আর তার নিট সম্পদ বেড়েছে ১৯ গুন। গত পাঁচ বছরে তিনি আয় করেছেন ৩৬ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪০ টাকা। টেকনাফ স্থলবন্দর ব্যবহার করে মিয়ানমারের সঙ্গে আমদানী-রফতানি বাণিজ্য করে তিনি এ অর্থ আয় করেছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। এছাড়া বদি বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৭ কোটি ৩৯ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৮ টাকা। আর বার্ষিক ব্যয় ২ কোটি ৮১ লাখ ২৯ হাজার ৯২৮ টাকা বলে জানিয়েছেন। এর আগে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ২০০৮ সালে তার বার্ষিক আয় ছিল ২ লাখ ১০ হাজার ৪৮০ টাকা। আর বার্ষিক ব্যয় ছিল ২ লাখ ১৮ হাজার ৭২৮ টাকা। ওই সময় বিভিন্ন  ব্যাংকে তার মোট জমা ও আমানত ছিল ৯১ হাজার ৯৮ টাকা। পাঁচ বছরের মাথায় তা বেড়ে দাড়িয়েছে ৮ কোটি ৫ লাখ ১০ হাজার ২৩৭ টাকায়। তার হাতে ২০০৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত নগদ টাকা ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৪৮ টাকা। আর বর্তমানে রয়েছে ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া তার স্ত্রীর কাছে রয়েছে নগদ ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ২৬৫ টাকা।

দুদকের মুখপাত্র প্রনব কুমার ভট্টাচার্য এবিসি নিউজ বিডিকে জানান, জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে কমিশনের নিয়মিত বৈঠকে এমপি বদিসহ আরও কয়েকজনের অবৈধ সম্পদের অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরই মধ্যে এদের বেশ কয়েকজনের সম্পদের অনুসন্ধান ও তদন্ত শুরু করেছে কমিশন।

তিনি বলেন, এমপি বদির অবৈধ সম্পদ অর্জনের যাবতীয় তথ্য উপাত্ত দুদক প্রধান কার্যালয়ে দাখিল করা হয়েছে। তবে এ প্রতিবেদনের দাখিলকৃত বিবরণ তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ