ভুলের জন্য রুহুল হকের দুঃখ প্রকাশ
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ স্ত্রীর হলফনামায় অসাবধানতাবশত ও অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও চিকিৎসক সমাজের কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক।
সোমবার দুপুর ২টায় দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও দুদকের চিঠি মোতাবেক এখানে এসেছেন বলেও জানান তিনি।
রুহুল হক বলেন, ‘২০১৪ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় হলফনামা পূরণের ক্ষেত্রে অসাবধানতাবশত ও অনিচ্ছাকৃতভাবে ৩০ জুন ২০১৩ তারিখে আমার স্ত্রীর ব্যাংক স্থিতি ৪৫ লাখ ১৭ হাজার ৯৯২ টাকার স্থলে সাত কোটি ৫৩ লাখ ১১ হাজার ২৪০ টাকা উল্লেখ করেছি। যা পরবর্তিতে জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে ভূল সংশোধনের জন্য জমা দিয়েছিলাম। পরবতির্তে এফিডেভিটের মাধ্যমে সংশোধন করেছি। তা নির্বাচন কমিশনও গ্রহণ করেছে। অসাবধানতা ও অনিচ্ছাকৃত ভুলের কারণে আওয়ামী লীগের সকল নেতৃবৃন্দ, চিকিৎসক সমাজের নিকট আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।’
এত বড় ভুল কিভাবে হলো সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়টি এড়িয়ে যান। তার সময়ে স্বাস্থ্যখাতে নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্ন করলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে চলে যান।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুদকের উপ-পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
১২ ফেব্রুয়ারি দুদক কার্যালয় থেকে সাবেকস্বাস্থ্য মন্ত্রীকে ২৪ ফেব্রুয়ারি তলব করে নোটিশ পাঠানো হয়। দুদকের উপ-পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম এ নোটিশ পাঠিয়েছিলেন।
অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ
গত পাঁচ বছরে তার ব্যাংক ব্যালেন্স বেড়েছে ১০ গুণ। পাঁচ বছর আগে রুহুল হক এবং তার স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত টাকা ছিল ৯২ লাখ ৩৬ হাজার ১০৮ টাকা। এখন তাদের ব্যাংক ব্যালেন্সের পরিমাণ ১০ কোটি ১৫ লাখ ৯৪ হাজার ৭৬৩ টাকা। ২০০৮ সালে স্ত্রী ইলা হকের নামে ব্যাংক ব্যালেন্স ছিল মাত্র চার লাখ ৬৪ হাজার ৩০ টাকা। এখন সাত কোটি ৫৩ লাখ ১১ হাজার ২৪০ টাকা। এক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার প্রায় ১৬৫ গুণ।
অন্যদিকে, রুহুল হকের ব্যাংক ব্যালেন্স ২০০৮ সালে ছিল প্রায় ৮৮ লাখ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে প্রায় দুই কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
নির্বাচন কমিশনের হলফনামা অনুসারে, সামগ্রিকভাবে ২০০৮ সালের তুলনায় তার অস্থাবর সম্পদ চার গুণ বেড়েছে। ২০০৮ সালে তিনি এবং তার স্ত্রীর মোট অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল চার কোটি টাকার কিছু বেশি। ২০১৩ সালে সম্পদের পরিমাণ ১৬ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে ১০ কোটি টাকা ব্যাংক ব্যালেন্স হিসাবে রাখা আছে। এককভাবে তার স্ত্রী ইলা হকের সম্পদের পরিমাণ বেড়ে গেছে আট গুণ। আগে তার নামে অস্থাবর সম্পত্তি ছিল মোট ৯৫ লাখ টাকা মূল্যের। এখন তা আট কোটি ৩৯ লাখ ছাড়িয়েছে।