মন্ত্রিসভায় গাছ কাটার অনুমোদন !
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বন বিভাগের সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনে গাছকাটার সিদ্ধান্ত আংশিক পরিবর্তন করা হয়েছে। জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জয়দেবপুর থেকে মাওনা পর্যন্ত বন বিভাগের সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনের ৪৯৮টি শালগাছ কাটা ও অপসারণের প্রস্তাব মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। এছাড়াও বাংলাদেশের মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ ব্যবস্থার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন সর্ম্পকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পক্ষ থেকে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, সভায় আজ দুটি বিষয় উপস্থাপিত হয়েছে। গাছকাটা ও অপসারণের প্রস্তাবটি এসেছে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে। এটি মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১০ সালের ৩০ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনের গাছকাটা বন্ধ থাকবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, উন্নয়নমূলক কাজের জন্য অনেক সময় গাছকাটা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রেও তাই হওয়ায় গাছকাটার এই প্রস্তাব মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে।
জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ সড়কটি ডবল লেন থেকে ফোর লেন করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী বর্তমানে এই সড়কটির নির্মাণ কাজ তত্ত্বাবধান করছে। তারা মাটির গুণগত মান পরীক্ষা করে এলাইনমেন্ট পরিবর্তন করায় কিছু গাছ কাটার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। তবে যেসব গাছ কাটা হবে তা বনে আবার লাগিয়ে সংখ্যা ঠিক রাখা হবে।
মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ ব্যবস্থার আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতি অর্জন সর্ম্পকে মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, বর্তমান সময়ে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন একটি বৈশ্বিক বিষয়। এ কারণে বিভিন্ন দেশ উদ্যোগ নিয়ে ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্স (এফএটিএফ) গঠন করে। মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে কোন কোন দেশ কি পদক্ষেপ নেবে তার একটি মানদণ্ড তারা নির্ধারণ করে দেয়।
তিনি বলেন, এটি আমাদের জন্য স্বস্তির বিষয যে, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশের পদক্ষেপকে তারা স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশ এখন কালো তালিকা থেকে বেরিয়ে এসেছে। এফএটিএফ এখন আমাদের পর্যবেক্ষণ করবে না।
তিনি বলেন, কালো তালিকা থাকলে পৃথিবীর বড় বড় ব্যাংকগুলো সেসব দেশের সঙ্গে ব্যবসা করতে চায় না এবং এতে দেশের ভাবমূর্তিও নষ্ট হয়।
বাংলাদেশ এ বিষয়ে একটি জাতীয় কৌশলপত্র গ্রহণ করায় এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সহ বিদ্যমান সন্ত্রাসবিরোধী আইনের দুবার সংশোধন করায় এই সাফল্য পাওয়া গেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, এসব কার্যক্রমকে সমন্বয় করার জন্য একটি কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছিল এবং সেই কমিটি খুবই সক্রিয় ছিল। উপযুক্ত কার্যক্রম গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ কালো তালিকা থেকে বের হয়ে এসেছে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রিগণ, বিভিন্ন মন্ত্রাণালয়ের দাযিত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রীবর্গ ও সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।