ভেঙে পড়ছে আ’লীগের মনোবল
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের একের পর এক পরাজয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে দলটি। এবার খোদ প্রধানমন্ত্রীর আসনেও তাদের প্রার্থীর পরাজয় হয়েছে। এতে ভেঙে পড়ছে নেতাকর্মীদের মনোবল। নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে কাজে আসছে না কোনো নির্দেশনা ও কৌশল। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত হতাশা আর আতঙ্ক।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানিয়েছে, পীরগঞ্জ প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের নির্বাচনী এলাকা হওয়ায় এ উপজেলার নির্বাচনকে তারা গুরুত্বের সঙ্গে নেয়। বিজয় নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় নেতারা গতকাল সোমবার খুবই ব্যস্ত সময় কাটান। দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সারাক্ষণ যোগাযোগ রাখেন। ফল প্রকাশের আগ পর্যন্ত তাদের মাঠে থাকতে বলা হয়। কিন্তু কোনো নির্দেশনাই কাজে আসেনি। সবাইকে হতাশ করে এই উপজেলায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর ভরাডুবি হয়।
এই পরাজয়ে নিরুত্তর আওয়ামী লীগ। পরাজয় তাদের ছাড়তে চাচ্ছে না। কোনোভাবেই টানতে পারছেন না পরাজয়ের লাগাম। পীরগঞ্জের পরাজয়ের খবর বাকি উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ায় এই পরাজয়ের ঢেউ ওইসব উপজেলায় আছড়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। আশঙ্কা মুক্ত নন দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও।
খোদ প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা পীরগঞ্জ উপজেলায় পরাজয়ের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, উপজেলা স্থানীয় নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচন নয়। জাতীয় ইস্যুর চেয়ে প্রার্থীর ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ড ও ভাবমূর্তি গুরুত্ব পেয়ে থাকে। এই উপজেলা প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা। এখানে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর পরাজয়ে আমরা বিশ্ববাসীর কাছে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রমাণ করতে পেরেছি। আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে অনুষ্ঠিত কোনো নির্বাচনে কারচুপি হয় না।
পীরগঞ্জে উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নূর মোহাম্মদ মন্ডল। চার হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে তিনি জয়ী হয়েছেন।আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৭৪৯৪২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছায়াদত হোসেন কাপ-পিরিচ প্রতীকে পেয়েছেন ৭০৮৭৭ ভোট।
চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের আরেক নেত্রী মেশকোয়ারা হাবিব ১৩ হাজার ৯৫২ ভোট পেয়েছেন। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন।
বিজয়ী নূর মোহাম্মদ মন্ডল এক সময় জাতীয় পার্টিতে ছিলেন এবং ২০০১ সালের নির্বাচনে তার কাছে হারতে হয়েছিল আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে।
শ্বশুরবাড়ির এলাকার এ সংসদীয় আসনে ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয় ঘরে তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর গোপালগঞ্জের আসনটি রেখে পীরগঞ্জ ছেড়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। ওই আসনে উপনির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।