১০৬ উপজেলার ফলাফলে বিএনপি ৪৮ আ’লীগ ৪৩ জামায়াত ৮ জাপা ১
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ দ্বিতীয় দফা উপজেলা নির্বাচনে ১০৬ উপজেলার বেসরকারি ফলাফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৪৮টিতে বিএনপি এবং ৪৩টিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত প্রার্থী ৮, জাপা ১ এবং অন্যরা পেয়েছেন ৬টি।
কেন্দ্র দখল, জাল ভোট, কারচুপি, ভোট বর্জন ও সংঘর্ষসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনার মধ্য দিয়ে ১১৫ উপজেলার ৮ হাজার ১৩৬টি কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে।
এদিকে নোয়াখালী সদর উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়। এছাড়া আরো ২৮টি কেন্দ্রে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে ইসি।
পার্বত্য চার উপজেলায় জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) চার নেতা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়িতে ইউপিডিএফ সমর্থিত প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
বান্দরবানের থানচিতে নির্দলীয় প্রার্থী চেয়ারম্যান হয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত বিজয়ী চেয়ারম্যানদের মধ্যে রয়েছেন- নেত্রকোণার পূর্বধলায় জাহিদুল ইসলাম সুজন, কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে মো. শফিউল আলম, ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এম এম মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাংগীতে মো. সফিকুল ইসলাম, ফেনীর পরশুরামে কামাল উদ্দিন।
এছাড়া মেহেরপুরের মুজিবনগরে বিএনপি সমর্থিত আমিরুল ইসলাম, পিরোজপুরের কাউখালীতে বিএনপির প্রার্থী এস এম আহসান কবীর এবং ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় বিএনপি নেতা ওয়াহিদুজ্জামান ওহিদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
রুমা উপজেলায় জনসংহতি সমিতির অংথোয়াইচিং মারমা এবং রোয়াংছড়িতে ক্যবামং মারমা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় ইউপিডিএফ সমর্থিত সুপার জ্যোতি চাকমা চেয়ারম্যান হয়েছেন।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপে ৯৭টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচন হয়। এর মধ্যে ৪৫টিতে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন বিএনপি নেতারা। আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা বিজয়ী হয় ৩৪টিতে। বিএনপির জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর ১২ জন উপজেলা চেয়ারম্যান হন।
এবারো বিএনপির পক্ষ থেকে কেন্দ্র দখল ও ভোট জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। দলটির নেতাদের অভিযোগ, এবার ‘ক্ষমতাসীনদের কেন্দ্র দখলের মহোৎসব’ হয়েছে।
কারচুপি, কেন্দ্র দখল, এজেন্টদের মারধরের অভিযোগ এনে নোয়াখালীর কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ, যশোরের শার্শা ও চৌগাছা, বরিশাল সদর এবং কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা ভোট চলাকালেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জে শুক্রবার, শার্শা ও চৌগাছায় শনিবার এবং চকরিয়ায় ও বরিশাল সদরে রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতালও ডেকেছে স্থানীয় বিএনপি।
তবে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে বলে দাবি করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমাম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “দেশের প্রত্যেকটি অঞ্চল থেকে আমরা যে তথ্য পেয়েছি, তাতে আমরা দাবি করতে পারি, সব জায়গায় শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।”
উল্লেখ্য, প্রথম ধাপে দেশের ৪০টি জেলার ৯৭টি উপজেলায় নির্বাচন হয়। এর মধ্যে বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ৪৪টি, আওয়ামী লীগ সমর্থিত ৩৪টি এবং জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী ১৩টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন।
পিরোজপুরের কাউখালীতে বিএনপির আহসান কবীর-১৩২৪৬ ভোট, মেহেরপুরের মুজিবনগরে বিএনপির আমিরুল ইসলাম -৩০৯১১ ভোট এবং লালমনিরহাটের পাটগ্রামে আওয়ামী লীগের রুহুল আমীন বাবু বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
রাঙামাটির নানিয়ার চরে জেএসএস প্রার্থী শক্তিমান চকমা এবং বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলায় ক্যাবামং মারমা জয়ী হয়েছেন।
আংশিক ফলাফল-
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত সাইফুল হুদা চৌধুরী শাতিল পেয়েছেন (কাপ পিরিচ)- ৩০১৪৯ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগের দেওয়ান সাইদুর রহমান পেয়েছেন (আনারস)-২৮৪২৯ ভোট। সদর উপজেলায় বিএনপির আতাউর রহমান-২৩১১০ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগের ইসরাফিল হোসেন- ৭৭৫৬ ভোট।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় আ’লীগের বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস (দোয়াত কলম)- ৯৮০৮ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দী আ’লীগের মুজিবুর রহমান হাওলাদার (চিংড়ি)- ৩৮৩১ ভোট।
ঢাকার সাভার উপজেলায় বিএনপির কফিল উদ্দিন(দোয়াত কলম)-৬৪৯৫ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগের ফিরোজ কবীর ৪০৫২ ভোট।
ময়মনসিংহের সদর উপজেলায় বিএনপির কামরুল ইসলাম ওয়ালিদ-২১৪৮০ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগের আশরাফ হোসাইন-১২৪২৮ ভোট।
চাঁদপুরের মতলব (দক্ষিণ) উপজেলায় আ’লীগের সিরাজুল মোস্তফা-১২৮০ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শুকুর পাটোয়ারী-১০৯৮ ভোট। মতলব (উত্তর) উপজেলায় আ’লীগের মঞ্জুর আহমেদ-১৫০৭৫ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী নুরুল হক-৪৭৯ ভোট। সদর উপজেলায় বিএনপির মো. শফিকুজ্জামান-৬৫১ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগের ইউসুফ গাজী-২১৩ ভোট।
সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলায় আ’লীগের আলী আজগর -২৫৮৭ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আনদাল মিয়া-২৪৮৮ ভোট ।
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় আ’লীগের আবু তাহের-৩৫৯৮ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সৈয়দ লিয়াকত ৩৪৯৪ ভোট।
সুনামগঞ্জের সদর উপজেলায় বিএনপির জয়নুল জাকেরিন-২৭৬১২ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগের জুনেদ আহমেদ-৭৪৫০ ভোট।
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় আ’লীগের শফিকুল ইসলাম- ১৩৭১৬ ভোট এবং বিএনপির আবু হায়াত- ১১২৮৫ ভোট।
খুলনার ডুমরিয়া আ’লীগ সমর্থিত আব্দুল হাদী- ২০৪১৭ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আলী মনসুর-২৭৬০৫ ভোট।
চাপাই নবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত বাইরুল ইসলাম- ৭১৪০ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগ সমর্থিত হুমায়ুন রেজা-৬৩৪৩ভোট।
পাবনার চাটমোহ উপরজেলায় বিএনপির হাসানুল হীরা-৩৮২০ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগের রেজাউল করিম- ২৯২২।
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় আ’লীগের গোলাম মোস্তফা-৫৭৩ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মোরশেদ আলম-৪২০ ভোট।
লালমনিরহাটের সদরে বিএনপির মমিনুল হক- ৮৮৯ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী মাহবুবুল আলম-৬১০ ভোট।
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় বিএনপির সাখওয়াত হোসেন-২২১২ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগের ফজলে রাব্বী-১২৩৭ ভোট।
কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলায় বিএনপির মোখলেসুর রহমান-৩৬৬২ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগের শফিউল আলম-১২৩৬ ভোট। নাগেশ্বরী উপজেলায় বিএনপির আবুল কাশেম-৩২৯৫ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী জাপার ফরিদুল ইসলাম-৩০৪৯ ভোট।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় আ’লীগের মোখলেসুর রহমান-৪৭৩৯ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মুরাদ আলী-১৯৯৬ ভোট।
কুষ্টিয়ার কুমার খালী উপজেলায় বিএনপির আব্দুল মান্নান-১৭৭০৩ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী নুরুল ইসলাম-৪৫৫৪ ভোট। মিরপুর উপজেলায় আ’লীগের কামরুল আরেফীন-৪৪৭৪৮ ভোট ও বিএনপির আব্দুল হক-১৫৯৪৯ ভোট।
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় বিএনপির আব্দুল হাই-১৮০১৬ ভোট এবং আ’লীগের মইজুদ্দিদন হামিদ- ১৪৫৪৬ ভোট।
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় আ’লীগের বিদ্রোহী মোজাফ্ফর আহমেদ-৪৩৫৪ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির বিদ্রোহী তিমির বরণ-২৮৯২ ভোট।
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় আ’লীগের মহব্বত জান-১০৫৫৪ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আনোয়ার হোসেন-১৪৪৪ ভোট।
রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলায় আ’লীগের মনিরুল হক-১৯৩০ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির দিলদার হোসেন-১১৭৩ ভোট।